তারাবীর ২০ রাকাত নামাজের প্রমাণ
১. হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত,
عَنْ ابن عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِيْ فِيْ رَمَضَانَ عِشْرِيْنَ رَكَعَةً وَالْوِتْرَ.
‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াাসাল্লাম রমজান মাসে ২০ রাকাত এবং বিতর পডতেন’
সূত্র:(মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং- ৭৭৭৪, মুসনাদে আব্দুবিন হুমাইদ- ২১৮, আল মুজামুল কাবীর হাদিস নং ১২১০২, মুজামুল আওসাত, হাদীস নং ৭৯৮, মাজমাউজ যাওয়ায়েদ,৩/১৭২, সুনানে বাইহাকি কুবরা, হাদিস নং ৪৩৯১
২. হযরত যাবের রাদিয়াল্লাহু বলেন,
রমজান মাসের এক রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওায়া সাল্লাম বাহিরে তাশরিফ নিয়ে এলেন আর সাহাবায়ে কেরামকে ২৪ রাকাত (চার রাকাত ইশার আর ২০ রাকাত তারাবীহের) নামাজ পডালেন। আর তিন রাকাত বেতের নামাজ পডালেন। ( তারিখে জুরজান ২৭)
৩-হযরত সাইব ইবনে ইয়াযীদ রাহ. বলেছেন-
كَانُوا يَقُومُونَ عَلَى عَهْدِ عُمَرَ بْنِ الْخَطّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ بِعِشْرِينَ رَكْعَةً.
ওমর ইবনে খাত্তাব রা.-এর যামানায় রমযান মাসে সাহাবায়ে কেরাম বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন।
সূত্র: (সুনানে কুবরা, বায়হাকী ২/৪৯৬) ইমাম নববী , হাফেজ ইরাকী ও ইমাম সুয়ূত্বী রাহ. হাদীসটিকে সহীহ বরেছেন- আছারূস সুনান: ২/৫৪, তুহফাতুল আহওয়াযী: ২/৭৫
৪. তাবেয়ী ইয়াযীদ ইবনে রুমান রাহ. বলেন-
كَانَ النّاسُ يَقُومُونَ فِي زَمَانِ عُمَرَ بْنِ الْخَطّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي رَمَضَانَ بِثَلَاثٍ وَعِشْرِينَ رَكْعَةً.
হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব রা.-এর যুগে সাহাবায়ে কেরাম তেইশ রাকাত নামায পড়তেন। অর্থাৎ তারা বিশ রাকাত তারাবী ও তিন রাকাত বিতির পড়তেন।
সূত্র: (মুয়াত্তা মালেক, কিতাবুল আসার: ৩৮০; সুনানে কুবরা, বায়হাকী ২/৪৯৬
৫. আবুল আলিয়া রাহ. থেকে বর্ণিত-
عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ أَنّ عُمَرَ أَمَرَ أُبَيّا أَنْ يُصَلِّيَ بِالنّاسِ فِي رَمَضَانَ فَقَالَ إِنّ النّاسَ يَصُومُونَ النّهَار وَلَا يحسنون أَن يقرؤا فَلَوْ قَرَأْتَ الْقُرْآنَ عَلَيْهِمْ بِاللّيْلِ! فَقَالَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ! هَذَا شَيْءٌ لَمْ يَكُنْ، فَقَالَ قَدْ عَلِمْتُ، وَلَكِنّهُ أَحْسَنُ، فَصَلّى بِهِمْ عِشْرِينَ رَكْعَة
উবাই ইবনে কা‘ব রা. বলেন, উমর রা. তাকে বললেন, মানুষেরা দিনের বেলা রোযা রাখে। (কিন্তু অনেকেই) সুন্দর করে কুরআন পড়তে পারে না। আপনি যদি তারাবীর নামাযের জামাত করতেন এবং তাদেরকে কুরআন পাঠ করে শোনাতেন ( তাহলে ভালো হত )! তখন উবাই ইবনে কা‘ব রা. বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! এই আমল তো নবীজীর যুগে ছিল না! উমর রা. বললেন, আমি তা জানি। তবে, জামাত করলে ভালো হবে। তখন উবাই ইবনে কা‘ব রা. সাহাবীদের নিয়ে বিশ রাকাত তারাবী পড়লেন।
সূত্র: (আল আহাদীসুল মুখতারাহ, হাদীস ১১৬১; মুসনাদে আহমাদ ইবনে মানী‘-কানযুল উম্মাল (হাদীস ২৩৪৭১)
৬. আব্দুর রহমান ইবনে আব্দিল আল ক্বারী বলেছেন,
عن عبد الرحمن بن عبد القارئ أنه قال: خَرَجْتُ مع عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عنْه لَيْلَةً في رَمَضَانَ إلى المَسْجِدِ، فَإِذَا النَّاسُ أوْزَاعٌ مُتَفَرِّقُونَ؛ يُصَلِّي الرَّجُلُ لِنَفْسِهِ، ويُصَلِّي الرَّجُلُ فيُصَلِّي بصَلَاتِهِ الرَّهْطُ، فَقَالَ عُمَرُ: إنِّي أرَى لو جَمَعْتُ هَؤُلَاءِ علَى قَارِئٍ واحِدٍ، لَكانَ أمْثَلَ. ثُمَّ عَزَمَ، فَجَمعهُمْ علَى أُبَيِّ بنِ كَعْبٍ، ثُمَّ خَرَجْتُ معهُ لَيْلَةً أُخْرَى والنَّاسُ يُصَلُّونَ بصَلَاةِ قَارِئِهِمْ، قَالَ عُمَرُ: نِعْمَ البِدْعَةُ هذِه، والَّتي يَنَامُونَ عَنْهَا أفْضَلُ مِنَ الَّتي يَقُومُونَ. يُرِيدُ آخِرَ اللَّيْلِ، وكانَ النَّاسُ يَقُومُونَ أوَّلَهُ.
“আমি মাহে রমজানে হযরত ওমর ইবনে খাত্তাবের সহিত মসজিদে গমন করিয়াছি। সেখানে গিয়ে দেখি লোকজন বিভিন্ন দলে বিভক্ত । কেউ একা নামায পড়িতেছেন । আবার কেউবা নামায পড়াচ্ছেন এবং তাঁর ইমামতিতে একদল লোক নামায আদায় করিতেছেন ।এই দৃশ্য দেখিয়া হযরত ওমর বলিলেন , ‘আমি মনে করি যে , কতইনা ভাল হইত যদি এই মুসল্লিগনকে একজন ক্বারীর সহিত একত্র করিয়া দেওয়া হইত ।‘অতঃপর তিনি সকল মুসল্লীগনকে উবাই ইবনে কা’ব এর ইমামতিতে একত্র করিয়া দিলেন ।‘আব্দুর রহমান বলেন, ‘ দ্বিতীয় রাতেও আমি তাহার সহিত মসজিদে গমন করিলাম। তখন লোকজন তাহাদের ক্বারীর ইক্তিদায় নামায পড়িতেছিলেন।হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব ইহা অবলোকন করিয়া বলিলেন – “ইহা অতি চমৎকার বিদআত বা নতূন পদ্বতি।’
সুত্র – সহীহ বুখারী , ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, হাদীস নং১৮৮৩, মুয়াত্তা , ইমাম মালিক, ২৯২,তারিখুল খুলাফা: ১৩১, তারিখে ইবনে আসির: ২/১৮৯
৭-
عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ رَفِيْعٍ قَالَ كَانَ اُبَىٍّ بْنِ كَعْبٍ يُصَلِىْ بِالنَّاسِ فِىْ رَمَضَانَ بِالمَدِيْنَةِ عِشْرِيْنَ رَكَعَةً وَيُوِتُر بِثَلَاثَةٍ
হযরত আব্দুল আজীজ বিন রফী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ হযরত উবায় বিন কাব রাঃ লোকদেরকে রমজান মাসে মদীনা মুনাওয়ারায় বিশ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বিতির নামায পড়াতেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-৫/২২৪}
৮-
عَنْ عَطَاءٍ قَالَ اَدْرَكْتُ النَّاسَ وَ هُمْ يُصَلُوْنَ ثَلَاثَةً وَعِشْرُوْنَ رَكَعَةً بِالْوِتْرِ
হযরত আতা [মৃত্যু-১১৪হিজরী] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি লোকদের [সাহাবী ও তাবেয়ীগণ] বিশ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বিতির পড়তে দেখেছি। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-৫/২২৪}
হযরত সুয়াইদ বিন গাফালা যিনি বয়সে রাসূল সাঃ থেকে মাত্র তিন বছরের ছোট ছিলেন। তিনি ইমামতি করাতেন। হযরত আবুল হাজীব বলেনঃ
৯-
كَانَ يَؤُمُّنَا سُوَيْدُ بْنُ غَفَلَةَ فِي رَمَضَانَ فَيُصَلِّي خَمْسَ تَرْوِيحَاتٍ عِشْرِينَ رَكْعَةً
হযরত সুইয়াইদ বিন গাফালা রমজান মাসে আমাদের জামাতের সাথে পাঁচ তারবিহায় বিশ রাকাত নামায পড়াতেন। {বায়হাকী-২/৪৯}
১০-
عَنْ أَبِي الْبَخْتَرِيِّ: أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّي خَمْسَ تَرْوِيحَاتٍ فِي رَمَضَانَ، وَيُوتِرُ بِثَلَاثٍ
হযরত আবুল বুখতারী রহ. বলেন, তিনি রমজানে পাঁচ তারবিহায় বিশ রাকাত ও তিন রাকাত বিতির পড়তেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৭৬৮৬}
১১-
عَنْ سَعِيدِ بْنِ عُبَيْدٍ، ্রأَنَّ عَلِيَّ بْنَ رَبِيعَةَ كَانَ يُصَلِّي بِهِمْ فِي رَمَضَانَ خَمْسَ تَرْوِيحَاتٍ، وَيُوتِرُ بِثَلَاثٍগ্ধ
হযরত সাঈদ বিন আবু উবায়েদ থেকে বর্ণিত। হযরত আলী বিন রাবীয়া পাঁচ তারবিহা তথা বিশ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বিতির জামাতের সাথে পড়তেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-৫/২২৫} ১৫
১২-
عن عبد العزيز بن رفيع قال كان أُبَيُّ بنُ كَعبٍ يُصلِّي بالنَّاسِ في رمضانَ بالمدينةِ عِشرِينَ رَكعَةً، ويُوتِرُ بثلاثٍ
হযরত আব্দুল আজীজ বিন রফী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ হযরত উবায় বিন কাব রাঃ লোকদেরকে রমজান মাসে মদীনা মুনাওয়ারায় বিশ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বিতির নামায পড়াতেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-৫/২২৪}