একই মজলিসে ভিন্ন শব্দে তিন তালাক প্রদান প্রসঙ্গে

প্রশ্ন : আমি ও আমার স্ত্রী দুজনে ডাটা খেত নিয়ে ঝগড়া করি। ঝগড়ার এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী আমাকে জুতা দিয়ে ঢিল মারে, এতে আমি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে -এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক, তোকে বাইন তালাক দিলাম- বলি। এখন আমাদের বৈবাহিক সম্পর্কের বিধান কি? আমি কি এ স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে পারবো? বলো

উত্তর : প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার স্ত্রীর উপর তিন তালাক কার্যকর হয়ে আপনাদের মধ্যকার বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে এবং এই স্ত্রী আপনার জন্য হারাম হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় তাকে নিয়ে ঘর-সংসার করা বা পুনরায় তাকে বিবাহ করা কোনোক্রমেই বৈধ হবে না।

তবে যদি সে তালাক প্রাপ্তা হওয়ার পর তার ইদ্দত তথা ঋতুবতী হলে তিনটি মাসিক ঋতুস্রাব অতিবাহিত হওয়া, গর্ভবতী হলে গর্ভ খালাস হওয়া, অন্যথায় তিনমাস অতিবাহিত হওয়ার পর যদি সহবাসে সক্ষম অন্য কোন মুসলিম পুরুষের সাথে সহীহ তরিকায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং সেই স্বামীর সাথে সহবাসও হয়, অতঃপর দ্বিতীয় স্বামী তাকে তালাক দেয় বা মারা যায়, তাহলে দ্বিতীয় স্বামীর তালাক বা মারা যাওয়ার ইদ্দত পালন করার পরে তাকে আপনি বিবাহ করতে পারবেন। এর পূর্বে নয়।

বি. দ্র. স্ত্রীকে একত্রে তিন তালাক দেওয়া কবীরা গোনাহ, অতএব আপনার তাওবা করা উচিত।

প্রমাণপঞ্জ

প্রমাণপঞ্জ

الطلاق مرتان فإمساك بمعروف أو تسريح بإحسان فإن طلقها فلا تحل له من بعد*

(২২৯-২30). حتى تنكح زوجا غيره. سورة البقرة

عن عائشة  رضي الله عنها أن رجلا طلق إمراته ثلاثا فتزوجت فطلق فسأل النبي  صلى الله عليه وسلم*

.اتحل للاول؟ قال لا حتى يذوق عسيلتها كما ذاق الأول

صحيح البخاري৫২৬১، صحيح المسلم  – ১৪৩২

قال الليث حدثني نافع قال كان ابن عمر رضي الله عنها إذا سئل عمن طلق ثلاثا*

قال لو طلقت مرة او مرتين فإن النبي صلى الله عليه وسلم : امرني بهذا فان طلقتا ثلاثا حرمت

حتى تنكح زوجا غيرك.    صحيح البخاري : ৫৩৬৪

* সহীহু মুসলিম : হাদীস নং ১৪৩২   * কিতাবুল আসল : ৪/৪৬৬,

* খুলাসাতুল ফাতাওয়া :২/৭৪,                    * আল হিদায়া : ২/৩৯৯,

*ফাতাওয়া হিন্দিয়া পৃ: ১/৪৭৩     *ফাতাওয়া কাযীখান পৃ:১/৪৫৪,

*রদ্দুল মুহতার পৃ: ৪/৪৪৪,                        * ফাতাওয়া রহিমিয়া পৃ: ৮/২৬০,

*ফাতাওয়া মাহমুদিয়া পৃ: ১৮/৬২          * ফাতাওয়া উসমানী পৃ: ৪২৮-৪২৯* আহসানুল ফাতাওয়া পৃ: ৫/১৯৮

* ইমদাদুল ফাতাওয়া পৃ: ২/৪৪৬     * আপকে মাসায়িল আওর উনকা হল পৃ: ৬/৬৩৭

 

প্রশ্ন : আমি মুহা. আব্দুছ ছাত্তার মিয়া। আমার বয়স ৩৮ বছর। আমার দুই জন সন্তান রয়েছে। আমার স্ত্রী মোসা : বিলকিস বেগম। আমাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে ২০০৫ ইং সনে। এই দীর্ঘ সময় আল্লাহর রহমতে আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক ভালই ছিল কিন্তু গত ১৬/১১/২০১৮ইং রোজ শুক্রবার একটি অঘটন ঘটে। এলাকার এক বিয়ের অনুষ্ঠানে আমাদেরকে দাওয়াত করা  হয়। সেখানে আমি বড় ছেলেকে না নিয়ে ছোট ছেলেকে নিয়ে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি। একারণে স্ত্রী মনঃক্ষুন্ন হয়। বাড়িতে এসে দেখি এনিয়ে স্ত্রী চিৎকার করছে। আমি লজ্জায় পড়ে যাই এবং তাকে নিষেধ করি কিন্তু সে অনবরত জোড় গলায় কথা বলেই যাচ্ছে। তখন আমি তাকে দুইটা থাপ্পর মারি । ফলে সে আরো উত্তেজিত হয়ে আমাকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করতে থাকে। তখন আমি রাগের মাথায় তাকে- এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক- বলি।

অতএব, হুজুরের নিকট আমার জানার বিষয় হচ্ছে, ইসলামী শরীয়ত মতে আমি আমার স্ত্রীর সাথে পুনরায় ঘর-সংসার করতে পারব কিনা? এবং উল্লেখিত বক্তব্যের কারণে আমারদের বৈবাহিক সম্পর্ক  বিচ্ছেদ হয়ে গেছে কিনা? সঠিক সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।

উল্লেখ্য, আমার স্ত্রী বর্তমানে গর্ভবতী নয়।

উত্তর: প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার স্ত্রী বিলকিস বেগমের উপর তিন তালাক কার্যকর হয়ে আপনাদের মধ্যকার বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে এবং এই স্ত্রী আপনার জন্য হারাম হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় পুনরায় তাকে বিবাহ করা বা তাকে নিয়ে ঘর-সংসার করা কোনোক্রমেই জায়েয হবে না। তবে যদি বিলকিস বেগম আপনার থেকে তালাক প্রাপ্তা হওয়ার পর পূর্ণ তিনটি মাসিক (ঋতুস্রাব) অতিবাহিত করার মাধ্যমে ইদ্দত পালন করে, অতঃপর সহবাসে সক্ষম অন্য কোন মুসলিম পুরুষের সাথে সহীহ তরীকায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং সেই স্বামীর সাথে সহবাসও হয়, তারপর দ্বিতীয় স্বামী তাকে তালাক দেয় বা মারা যায়, তাহলে দ্বিতীয় স্বামীর তালাক মা মৃত্যুর ইদ্দত পালন করার পর আপনি তাকে বিবাহ করতে পারবেন; এর পূর্বে নয়।

প্রমাণপঞ

ا

الطلاق مرتان فإمساك بمعروف أو تسريح بإحسان فإن طلقها فلا تحل له من بعد

(২২৯-২৩০, حتى تنكح زوجا غيره.   (سورة البقرة

عن عائشة  رضي الله عنها أن رجلا طلق إمراته ثلاثا فتزوجت فطلق فسأل النبي  صلى الله عليه وسلم *

اتحل للاول؟ قال لا حتى يذوق عسيلتها كما ذاق الأول

( صحيح البخار ي ৫২৬১، صحيح المسلم- ১৪৩২)

قال الليث حدثني نافع قال كان ابن عمر رضي الله عنها إذا سئل عمن طلق ثلاثا*

قال لو طلقت مرة او مرتين فإن النبي صلى الله عليه وسلم : امرني بهذا فان طلقتا ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غير*

(صحيح البخار ي  : ৫৩৬৪)

* ফাতহুল কাদীর পৃ: ৩/৩৩০,                        * বাহরুর রায়িক  পৃ: ৩/২৭৩,

* রদ্দুল মুহতার পৃ: ৩/২৪৮,                          * ফাতাওয়া রহিমিয়া পৃ: ৮/২৫৯

*ফাতাওয়া মাহমুদিয়া পৃ: ১৮/৬২       * ফাতাওয়া উসমানী পৃ: ৪২৮

* আহসানুল ফাতাওয়াপৃ: ৫/১৯৮        * ইমদাদুল ফাতাওয়া পৃ: ২/৪৪৬

* আপকে মাসায়িল আওর উনকা হল পৃ: ৬/৬৩৭

প্রশ্ন : আমি মো: আলমীন, পিতা-মৃত লুৎফুর রহমান, মাতা-মলিকা খাতুন, গ্রাম-দুবাশিয়া, থানা-গফরগাঁও, জেলা-ময়মনসিংহ গত ০৪/০৪/১৭ইং তারিখে পারিবারিক ব্যাপারে রাগ করে উত্তেজিত হয়ে আমার স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তার, পিতা-মৃত কলিম উদ্দীন, মাতা রাবিয়া খাতুনকে “তোকে ফয়সালা করে দিব, রাখবো না, ছেড়ে দিবো” বলে ফেলি। এরপর “এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক” বলে ফেলি। আমার স্ত্রীর বয়স ২৬ বছর। তার থেকে আমার একটি দেড় বছরের সন্তান আছে। বর্তমানে সে গর্ভবতী নয়।

অতএব হুজুর সমীপে আকুল আবেদন এই যে, আমি আমার স্ত্রীর সাথে শরিয়তের  বিধান অনুযায়ী আর ঘর সংসার করতে পারবো কিনা? পারলে তা কিভাবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর : প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তারের উপর তিন তালাক পতিত হয়ে আপনাদের মধ্যকার বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে এবং এই স্ত্রী আপনার জন্য হারাম হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় পুনরায় তাকে বিবাহ করা বা তাকে নিয়ে ঘর-সংসার করা কোনোক্রমেই জায়েয হবে না।

তবে যদি ফেরসৌদী আক্তার আপনার থেকে তালাকপ্রাপ্তা হওয়ার পর পূর্ণ তিনটি মাসিক ঋতুস্রাব অতিবাহিত করার মাধ্যমে ইদ্দত পালন করে, অতঃপর সহবাসে সক্ষম অন্য কোনো মুসলিম পুরষের সাথে সহীহ তরীকায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং সেই স্বামীর সাথে সহবাসও হয়, তারপর দ্বিতীয় স্বামী তাকে তালাক দেয় বা মারা যায়, তাহলে দ্বিতীয় স্বামীর তালাক বা মৃত্যুর ইদ্দত পালন করার পর আপনি তাকে বিবাহ করতে পারবেন। এর পূর্বে নয়।

উল্লেখ্য, স্ত্রীকে একত্রে তিন তালাক দেওয়া কবীরা গোনাহ। অতএব, আপনার এস্তেগফার ও তাওবা করা

উচিত।

প্রমাণপঞ্জি……

 

 

الطلاق مرتان فإمساك بمعروف أو تسريح بإحسان فإن طلقها فلا تحل له من بعد

(২২৯-২৩০, حتى تنكح زوجا غيره.   (سورة البقرة

عن عائشة  رضي الله عنها أن رجلا طلق إمراته ثلاثا فتزوجت فطلق فسأل النبي  صلى الله عليه وسلم *

اتحل للاول؟ قال لا حتى يذوق عسيلتها كما ذاق الأول

( صحيح البخار ي ৫২৬১، صحيح المسلم- ১৪৩২)

قال الليث حدثني نافع قال كان ابن عمر رضي الله عنها إذا سئل عمن طلق ثلاثا*

قال لو طلقت مرة او مرتين فإن النبي صلى الله عليه وسلم : امرني بهذا فان طلقتا ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غير*

( صحيح البخار ي  : ৫৩৬৪)

*সুরা তালাক আয়াত নং-১                           * সহিহ বুখারী হাদিস নং-৫৩৬১     *সহিহ মুসলিম ১৪৩৩

*ফাতহুল কাদীর পৃ: ৩/৩৩০,                      * বাহরুর রায়িক  পৃ: ৩/২৭৩,            *রদ্দুল মুহতার পৃ: ৩/২৪

*ফাতাওয়া রহিমিয়া পৃ:৮/২৫৯                   *ফাতাওয়া মাহমুদিয়া পৃ:১৮/৬২       *ফাতাওয়া উসমানী পৃ: ৪২৮

* আহসানুল ফাতাওয়া পৃ: ৫/১৯৮              * আপকে মাসায়িল আওর উনকা হল পৃ: ৬/৬৩৭  * ইমদাদুল ফাতাওয়া পৃ: ২/৪৪৬

সোশ্যাল মিডিয়া

Facebook
Telegram
WhatsApp
Email

সংবাদ