সফল ভারতীয় ছবি 'পুষ্পা'-র নায়িকা রাশমিকা মানদানার একটি ভুয়া ভিডিও এখন ভাইরাল হয়ে গেছে। ডিপফেক প্রযুক্তি দিয়ে বানানো ওই অশ্লীল ভিডিওতে মিজ মানদানার মতো দেখতে এক নারীকে দেখা গেছে।
মিজ মানদানা এই বিষয়ে 'হতাশা' প্রকাশ করেছেন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর সমাধান খুঁজে বের করার আবেদনও করেছেন যাতে তার মতো আর কাউকে এই ‘সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়’।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) মিজ মানদানা লিখেছেন, “সত্যি কথা বলতে, এ ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র আমার জন্য নয় সবার জন্যই খুব আশঙ্কাজনক।”
অভিনেত্রী আরও লিখেছেন, আজকাল যেভাবে প্রযুক্তির অপব্যবহার হচ্ছে, তাতে শুধু তিনিই নন, আরও অনেকেই বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
"আজ, একজন নারী এবং অভিনেতা হিসাবে, আমি পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে কৃতজ্ঞ যাঁরা আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে সুরক্ষিত রেখেছেন। আমি সত্যিই ভাবতে পারছি না স্কুলে বা কলেজে পড়াকালীন এমন কিছু ঘটলে আমি কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতাম,” তিনি ঐ পোস্টে লেখেন।
ডিপফেক এমন একটি প্রযুক্তি যাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে অডিও বা ভিডিওতে কারচুপি করা সম্ভব।
সহজ ভাষায়, এআই ব্যবহার করে এই কৌশলের সাহায্যে ভুয়া ভিডিও তৈরি করা যায়, যা দেখতে আসলের মতো । এই কারণে এর নামকরণ করা হয় ডিপফেক।
বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালে একজন রেডিট ব্যবহারকারী অশ্লীল ভিডিওতে একজনের চেহারা পরিবর্তনের জন্য এই কৌশলটি ব্যবহার করেন।
পরে রেডিট 'ডিপফেক পর্ণ' নিষিদ্ধ করে দেয়।
ডিপফেক বিষয়টি বেশ জটিল। এর জন্য মেশিন লার্নিং-এর বিষয়ে দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।
ডিপফেক সামগ্রী দুটি অ্যালগরিদম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়, যার একটিকে বলা হয় ডিকোডার এবং অন্যটিকে বলে এনকোডার। এটি ভুয়া ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে ডিকোডারকে পাঠিয়ে যাচাই করতে বলে কনটেন্টটি আসল নাকি নকল।
প্রতিবার ডিকোডার যাচাই করে সেই তথ্য এনকোডারে পাঠায় যাতে পরবর্তী ডিপফেকটি সংশোধন করে আসলের আরও কাছাকাছি তৈরি করা যায়।
দুটি প্রক্রিয়া একত্রিত হয়ে তৈরি হয় ‘জেনারেটিভ অ্যাডভার্সেরিয়াল নেটওয়ার্ক’ বা জিএএন।
ডিপফেক কি না কীভাবে বোঝা যাবে? কোনও কনটেন্ট ‘ডিপফেক’ কি না বুঝতে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে লক্ষ্য করা খুবই প্রয়োজন। এর মধ্যে প্রথমটি হল মুখের অবস্থান। প্রায়শই ডিপফেক প্রযুক্তি মুখ এবং চোখের অবস্থানকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে নকল করে উঠতে পারে না। এর মধ্যে চোখের পাতা পড়ার বিষয়টিও রয়েছে। যদি লক্ষ্য করেন চোখ-নাকের অবস্থানে সামঞ্জস্য নেই বা অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও চোখের পলক পড়ছে না, তাহলে বুঝতে হবে, কন্টেন্টটি ডিপফেক। ডিপফেক কনটেন্টের ‘কালারিং’-এর বিষয়টি মনোযোগ দিয়ে দেখলেও বোঝা যেতে পারে ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে কারচুপি করা হয়েছে।