২৫শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার শরৎকাল

মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে : সিটি মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙ্গালীর স্বাধীনতার জন্য অনেক বড় বড় মনীষি আগ্রাণ চেষ্টা করেও স্বাধীনতা এনে দিতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের আকাক্সক্ষাকে বাস্তবায়ন করেছেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। একারণেই হাজার বছরের ইতিহাসে তিনি শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। কিন্তু দুভার্গ্য ১৯৭৫সালের ১৫আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করে ক্ষান্ত হয়নি ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নামও মুছে দেয়ার সমস্ত অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। তারা বুঝতে পারে নাই বঙ্গবন্ধু কাগজে লেখা একটি নাম নয় বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালীর অন্তরে ধারণ করা একটি নাম ও ইতিহাস। তিনি আরো বলেন, ইতিহাসের সন্তানেরা কোন দিন মরে না তারা মৃত্যুহীন। দীর্ঘ ২১বছরের মধ্যে আজকের প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিভাবে বুঝানো ও শিখানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে এই ইতিহাসকে আবার নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেছেন। মেয়র নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা ও আত্মত্যাগ সম্পর্কে ধারণা নিয়ে আগামীদিনের নেতৃত্ব গ্রহণে প্রস্তুত হতে আহ্বান জানান। তিনি স্মরণ করে দিয়ে বলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হারিয়ে গেলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে। সেই কারণেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনসহ তাদের জীবন বাজি রেখে যে অবদান রেখে গেছেন সে দীক্ষায় দিক্ষিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে। আজ রোববার সকালে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে চসিক কর্তৃক ১৭৩জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা জানাতে গিয়ে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী। আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক মহাসচিব ডা. জাফরউল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম। এসময় উপস্থিত ছিলেন সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরবৃন্দ।
মেয়র আরো বলেন, চট্টগ্রাম সব কিছুতেই অগ্রগামী, সর্বযুগে সমস্ত আন্দোলন, সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সূচনা লগ্নেও চট্টগ্রাম সবার আগে ছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই চট্টগ্রাম থেকে তৎকালীন ইপিআর’র ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধের সূচনা হয় এবং তার পরের দিনেই কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এই কারণে চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা অনন্য। তিনি বলেন, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের যদি আমরা সংবর্ধনা না দেই তাহলে স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে না। এতে করে প্রকৃত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানা থেকে আমরা বঞ্চিত হবো। তিনি মুক্তিযুদ্ধের গবেষক, লেখক ও ইতিহাসবিদদের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে যুদ্ধকালীন সময়ের স্থানীয় বিভিন্ন কার্যক্রম, অপারেশন ও যুদ্ধের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠান শেষে চসিকের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।