১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার বসন্তকাল

লোহাগাড়ার বড়হাতিয়ায় সরিষা ফুলের হলুদ রঙ্গে সজ্জিত ফজলের ফসলী মাঠ

লোহাগাড়া থেকে মোঃ ইউসুফ : উপজেলার কোন কোন এলাকার চরে-বিলে শোভা পাচ্ছে হলুদ রঙ্গের সরিষা ক্ষেত। বর্ণিল সাজে সজ্জিত সরিষা ফুলের হলুদ দৃশ্য ক্ষেত জুড়ে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে প্রকৃতির রতœভান্ডারে। শীতের হিমেল হাওয়ায় হেলেদোলে নৃত্য করছে কীট-পতঙ্গ ও মৌমাছির গুঞ্জনে। হলুদ বর্ণের সরিষার ফুল আকৃষ্ট করছে পথচারী ও গাঁ-গেরামের প্রকৃত-প্রেমিক লোকজনের মন। ক্ষেতের অপরূপ দৃশ্য দেখে কৃষকেরা ও খুশী। নৈসর্গিক শোভামন্ডিত সরিষা ফুলের চাষ বছরের এ মৌসুমে দৃষ্টিগোচর হয় বিভিন্ন এলাকায়।
সরিষা ফুল চাষ অন্যতম অর্থকারী ফসল। কয়েক বছর যাবৎ এ’সরিষা চাষ হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। বিশেষ করে চরাঞ্চলের বা সেচ সুবিধেসম্মত জায়গায় কৃষকেরা শীতকালীন শাক-সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি এ সরিষা ক্ষেত করেছেন। সরিষা ক্ষেতে উৎপাদন ব্যয় কম এবং ফলন হয় ভালো। যে কারণে কৃষকেরাও লাভবান হন বেশী। ফলে, এলাকার উৎসাহী কৃষকেরা সরিষা চাষের দিকে ক্রমান্বয়ে ঝুঁকে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, তুলনামূলকভাবে সরিষা চাষে ব্যয় হয় কম এবং ফলন পেতে সময় ও কম লাগে। এ সরিষা বীজ থেকে উৎপন্ন হয় ভোজ্যতেল। এ তেল সরিষার তেল নামে খ্যাত। গুণে-মানে অনেক উত্তম। ভোজ্যতেলের মধ্যে এ’ তেলের দাম তূলনামূলকভাবে বেশী। এরপর ও এ’তেলের চাহিদা আছে অনেক বেশী। তাই কৃষকেরা শীতকালীন রবিশষ্য উৎপাদনের পাশাপাশি সরিষা ক্ষেত করার দিকে ক্রমশঃ ঝুঁকে পড়েছেন।
সরজমিনে এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, টঙ্কাবতী ও ডলুনদীর চরাঞ্চল বা তৎসংলগ্ন সমতল ভূমিতে বিভিন্ন শ্রেণীর শাক-সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি সরিষা চাষ করেছেন আগ্রহী কৃষকেরা। বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডস্থ সর্দার পাড়ার পাশর্^বর্তী এলাকার কৃষক ফজল আহমদ বলেন, তিনি এবার ২ খানি বা ৮০ শতক জমিতে সরিষা ক্ষেত করেছেন। আবাদে তূলনামূলকভাবে খরচ ও কম হয়েছে এবং কম সময়ে ফলন ও ভালো হয়েছে। পলিমাটি মির্শ্রিত জায়গায় সরিষা ক্ষেত ভালো হয় এবং কম খরচে স্বল্প সময়ের মধ্যে ভালো ফলন পাওয়া যায়। অন্যান্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষে লাভবান হওয়া যায় বেশী। তাই তিনি অন্যান্য শাক-সবজির ক্ষেতের পাশাপাশি সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল ইসলাম জানান, এ’বারের লক্ষমাত্রা ছিল ২ শত ৪৯ হেক্টর। এ পর্যন্ত অর্জিত ১ শত ৮৪ হেক্টর। তবে, গত বছরের চেয়ে বেশী বলে তিনি জানিয়েছেন। বন্যাসহ নানা দূর্যোগের কারণে সরিষা চাষের চাষীর সংখ্যা এবার কমে গেছে। সরিষা চাষে প্রণোদনা হিসেবে ৩ শত জন এবং সাধারণ পর্যায়ে ৪ শত জন কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।