১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার বসন্তকাল

চরে-বিলে শোভা পাচ্ছে সবজি ক্ষেত

লোহাগাড়া থেকে মোঃ ইউসুফঃ– বর্ষার অবসানে ঘটেছে শীত মৌসুমের আগমন। অগ্রহায়ণ মাসে প্রকৃতির মৌণতায় পরিবেশ কোলাহলশূণ্য। পৌষের হিমেল হাওয়ায় প্রকৃতির নীরবতা প্রাণী জগতের এক প্রকার পুলক শিহরণ। শীতের জড়তা ও মৌণতার মাঝে বর্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষীরা ক্ষেত প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে খোলা বিল,নদী ও খালের চরাঞ্চলে শাক-সবজি ও তরিতরকারি উৎপাদন করতে ক্ষেতের জায়গা আবাদকরণে চাষীদের এ’কর্মব্যস্ততা দেখা গেছে।
উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে টঙ্কা ও ডলু নদী। এ’ছাড়া রয়েছে হাঙ্গর, জাংছড়ি,সরই, সুখছড়িসহ আরো অন্যান্য খালসমূহ। বর্ষায় নদী ও খালসমূহের বানের পানিতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফসলী ক্ষেত, মৎস্যক্ষেত, গ্রাম্য যাতায়াত সড়ক ও বসতঘর। আর্থিক দূরাবস্থায় মানুষ হন অসহায় ও নিরাশ্রয়। কৃষকেরা ফসলহারা বেদনায় অর্থনৈতিকভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েন। অবশেষে বর্ষার অবসানে অগ্রহায়ণ ও ফাল্গুন মাসে শাক-সবজি ও তরিতরকারী উৎপাদনে নতুন স্বপ্ন দেখেন। খোলা মাঠে ও চরে চলতে থাকে ক্ষেতের জায়গা আবাদকরণের মহা-ধূমধাম। মূলা,বেগুন,লাউ,টমোটো ,কাঁচা মরিচ,ধইন্যা পাতা, ফুলকপি,বাঁধা কপি, লাল শাক, লাউ শাক, মূলা শাক,বরবটি,শিম, আলুসহ আরো বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি ও তরিতরকারি রোপন করছেন। বিশেষ করে আমিরাবাদের হাজারবিঘা, রাজঘাটা,মুহরী পাড়া-ঘোনা পাড়া এবং কলাউজানের আদারচর প্রভৃতি এলাকা সংলগ্ন টঙ্কাবতী নদীর চর,ডলু নদীর বিভিন্ন এলাকার চরাঞ্চল, হাঙ্গর খালের পদুয়া এলাকার চরাঞ্চল, হাতিয়া,কূলপাগলী, থমতমিয়া,সুখছড়ি, সরই প্রভৃতি খাল সংলগ্ন চরাঞ্চলে ও উল্লেখিত শাক-সবজি চাষের পূর্ণ প্রস্তুতি চালাচ্ছেন চাষীরা। মাটির উর্বরা শক্তি ও পানি সেচের সুবিধে থাকার কারণে চরাঞ্চলের চাষীরা শাক-সবজি উৎপাদনের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের উৎপাদিত কোন কোন শাক-সবজি হাট-বাজারে বেচাকেনা হতে দেখা গেছে। গুনে-মানে ও দামে ক্রেতারা সন্তুষ্ঠ এবং বিক্রেতারা ও লাভবান হচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ’ব্যাপারে উত্তর আমিরাবাদ তালুকদার পাড়ার চর এলাকার চাষী আবুল কালাম জানান, প্রতিবছর টঙ্কাবতী নদীর চরে শাক-সবজি ও তরিতরকারির চাষ করে তিনি লাভবান হন এবং বর্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাঁর এ পরিশ্রম বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিউল ইসলামের সহিত ১৪ ডিসেম্বর মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এবারে শাক-সবজি ও তরিতরকারি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৪ শত হেক্টর এবং অর্জন হয়েছে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শত ৪০ হেক্টর। জায়গা আবাদকরণ ও রোপন প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।