লোহাগাড়া থেকে মোঃ ইউসুফঃ– বর্ষার অবসানে ঘটেছে শীত মৌসুমের আগমন। অগ্রহায়ণ মাসে প্রকৃতির মৌণতায় পরিবেশ কোলাহলশূণ্য। পৌষের হিমেল হাওয়ায় প্রকৃতির নীরবতা প্রাণী জগতের এক প্রকার পুলক শিহরণ। শীতের জড়তা ও মৌণতার মাঝে বর্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষীরা ক্ষেত প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে খোলা বিল,নদী ও খালের চরাঞ্চলে শাক-সবজি ও তরিতরকারি উৎপাদন করতে ক্ষেতের জায়গা আবাদকরণে চাষীদের এ’কর্মব্যস্ততা দেখা গেছে।
উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে টঙ্কা ও ডলু নদী। এ’ছাড়া রয়েছে হাঙ্গর, জাংছড়ি,সরই, সুখছড়িসহ আরো অন্যান্য খালসমূহ। বর্ষায় নদী ও খালসমূহের বানের পানিতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফসলী ক্ষেত, মৎস্যক্ষেত, গ্রাম্য যাতায়াত সড়ক ও বসতঘর। আর্থিক দূরাবস্থায় মানুষ হন অসহায় ও নিরাশ্রয়। কৃষকেরা ফসলহারা বেদনায় অর্থনৈতিকভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েন। অবশেষে বর্ষার অবসানে অগ্রহায়ণ ও ফাল্গুন মাসে শাক-সবজি ও তরিতরকারী উৎপাদনে নতুন স্বপ্ন দেখেন। খোলা মাঠে ও চরে চলতে থাকে ক্ষেতের জায়গা আবাদকরণের মহা-ধূমধাম। মূলা,বেগুন,লাউ,টমোটো ,কাঁচা মরিচ,ধইন্যা পাতা, ফুলকপি,বাঁধা কপি, লাল শাক, লাউ শাক, মূলা শাক,বরবটি,শিম, আলুসহ আরো বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি ও তরিতরকারি রোপন করছেন। বিশেষ করে আমিরাবাদের হাজারবিঘা, রাজঘাটা,মুহরী পাড়া-ঘোনা পাড়া এবং কলাউজানের আদারচর প্রভৃতি এলাকা সংলগ্ন টঙ্কাবতী নদীর চর,ডলু নদীর বিভিন্ন এলাকার চরাঞ্চল, হাঙ্গর খালের পদুয়া এলাকার চরাঞ্চল, হাতিয়া,কূলপাগলী, থমতমিয়া,সুখছড়ি, সরই প্রভৃতি খাল সংলগ্ন চরাঞ্চলে ও উল্লেখিত শাক-সবজি চাষের পূর্ণ প্রস্তুতি চালাচ্ছেন চাষীরা। মাটির উর্বরা শক্তি ও পানি সেচের সুবিধে থাকার কারণে চরাঞ্চলের চাষীরা শাক-সবজি উৎপাদনের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের উৎপাদিত কোন কোন শাক-সবজি হাট-বাজারে বেচাকেনা হতে দেখা গেছে। গুনে-মানে ও দামে ক্রেতারা সন্তুষ্ঠ এবং বিক্রেতারা ও লাভবান হচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ’ব্যাপারে উত্তর আমিরাবাদ তালুকদার পাড়ার চর এলাকার চাষী আবুল কালাম জানান, প্রতিবছর টঙ্কাবতী নদীর চরে শাক-সবজি ও তরিতরকারির চাষ করে তিনি লাভবান হন এবং বর্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাঁর এ পরিশ্রম বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিউল ইসলামের সহিত ১৪ ডিসেম্বর মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এবারে শাক-সবজি ও তরিতরকারি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৪ শত হেক্টর এবং অর্জন হয়েছে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শত ৪০ হেক্টর। জায়গা আবাদকরণ ও রোপন প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
