১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার বসন্তকাল

ভুল চিকিৎসায় রোগীর স্তন কেটে ফেলার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে টিউমার অপসারণের কথা বলে হাসপাতালটির স্তন ক্যানসার সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. জেসমিন বেগমের বিরুদ্ধে এক নারীর স্তন কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ।
অভিযোগ, টিউমারের ছোট অপারেশনের কথা বলে ভুক্তভোগী কোহিনূর বেগমকে না জানিয়েই পুরো একটি স্তন কেটেছেন ওই ডাক্তার। অভিযোগ তদন্তে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ডাক্তারের পক্ষেই কথা বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগী কোহিনূর বেগম জানান, স্তনের সমস্যা নিয়ে ২১ জানুয়ারি ডা. জেসমিন বেগমের শরণাপন্ন হন তিনি। এসময় তাকে বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও দেন তিনি। মাসখানেক পর পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে ডা. জেসমিন তাকে জানান একটি স্তনে ছোট গোটা উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সেটির অপারেশন করলেই এ সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পারেন কোহিনূর। অপারেশনে বড় ধরনের কাটাছেঁড়া হবে না বলেও আশ্বস্ত করা হয় তাকে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে অপারেশনের জন্য ভর্তি হন কোহিনূর বেগম। পরদিন তার অপারেশন করেন ডা. জেসমিন। অপারেশনের আগে স্তন থেকে ছোট একটি গোটা/টিউমার অপসারণ করার কথা বলা হলেও অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে কোহিনূর বুঝতে পারেন তার একটি স্তন সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হয়েছে। এর কারণ জানতে চাইলে ওই ডাক্তার তাকে বলেন, ‘ডাক্তার আমি নাকি আপনি? আমি আপনার চেয়ে ভালো বুঝি। স্তন কাটার প্রয়োজন হয়েছে বলেই কেটেছি।’
ভুক্তভোগীদের থেকে জানা যায়, ভুল চিকিৎসার বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ডবলমুরিং থানায় অভিযোগ করতে গেলে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ের অযুহাত দিয়ে থানা পুলিশ তাদের সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অভিযোগ করতে বলে। পরবর্তীতে ২৭ মার্চ সিভিল সার্জন ও ২৮ মার্চ মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তারা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডেপুটি সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে, একজন গাইনোকোলজিস্ট ও একজন সার্জন নিয়ে মেডিক্যাল টিম গঠনের নির্দেশ দেন সিভিল সার্জন।
তদন্ত কমিটির ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী পত্রিকাকে বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। তদন্ত কমিটি ১ সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগে প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ যার বিরুদ্ধেই হোক না কেন তদন্ত কমিটি স্বচ্ছতার সাথে অভিযোগের তদন্ত করবে এমনটা আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি।’
অভিযুক্ত ডা. জেসমিন বেগমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।