লোহাগাড়া থেকে মোঃ ইউসুফ : শখ পূরণে অনেকে জীবনে আর্থিক সফলতা বয়ে আনেন বৈচিত্রময় জীবন পরিক্রমায়। এর মাঝে রয়েছে নিরলস শ্রম সাধনা। জীবন গড়ার রঙ্গীন স্বপ্ন তাঁদের কর্মময় জীবনের চলার পথকে অলংকৃত করে স্বাবলম্বী করে তোলে। তা’ই তাঁরা কঠোর পরিশ্রম করে নিজ পায়ে দাঁড়াতে চান।
পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি-এ’উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের পরিচয় পাওয়া যায় উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ডোয়ার পাড়ার কুল বাগানের মালিক আনোয়ার-এর জীবনে। জীবন গড়ার সফলতা মানুষকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তোলে। এহেন আত্মপ্রত্যয়ে জীবনকে স্বাবলম্বী করে তোলে পদুয়ার ডোয়ার পাড়ার উক্ত আনোয়ার’কে। তিনি একজন সহজ-সরল প্রকৃতির গ্রামীণ শ্রমপ্রিয় মানুষ। বয়স প্রায় ৩৩ বছর। পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখ-শান্তিতে বসবাস করে যাচ্ছেন। বিগত ২০১৯ সালে তিনি পুরোপুরি স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। শুরু করেন ক্ষেত-খামার ও মৎস্য চাষ। বাড়ির অদূরে খোলা জায়গা খনন করে জলাশয় সৃষ্টি করেন। মৎস্য চাষের পাশাপাশি শুরু করেন কুল বা বরই চাষ। তৎসংলগ্ন পৃথক দুই সমতল জায়গা আবাদ করে কুলের চারা রোপন করেন। প্রথমতঃ অস্ট্রোলিয়ার বল সুন্দরী নামে ৩ শত কুলের চারা রোপন করেন। ক্রয়মূল্য প্রতিটি ৭০ টাকা ছিল বলে বাগানের মালিক আনোয়ার হত ২৪ জানুয়ারী এলাকা পরিদর্শনকালে একান্ত এক সাক্ষাৎকারে জানান। সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে স্বাবলম্বী হতে হবে। তা’ই। আতœনির্ভরশীল হতে প্রকৃতিপ্রেম তাঁকে অনুপ্রাণিত করে। ফলে, তিনি ঝুঁকে পড়েন মৎস্য চাষ ও ফল বাগান করার দিকে। বর্তমানে জলাশয়ের পাড়সহ অন্য দুই ক্ষেতে প্রায় ৭ শতাধিক কুল গাছ রয়েছে। সাম্প্রতিককালের ভায়াবহ বন্যায় সমতল জায়গার দুটো কুলবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুকুর পাড়ের চারাগুলো রক্ষা পেয়েছে। রোপনের ১ বছর পর অর্থাৎ ২০২০ সাল থেকে ফলন শুরু হয়। শুরুর পর থেকে এ’পর্যন্ত পরিচর্যা,সার কীটনাশকসহ তাঁর বার্ষিক ব্যয় প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা বলে জানান। বর্তমানে ফলনের অবস্থা ভালো হওয়ায় এ ’পর্যন্ত চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার কুল বিক্রি করেছেন। গুণে-মানে ও স্বাদে তাঁর বাগানের কুল খুবই জনপ্রিয়। ১ শত থেকে দেড় শত টাকা করে প্রতি কেজি পাইকারী ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে হরদম। কুলের আকার বড় এবং স্বাদে খুবই মিষ্টি। তা’ই মানুষ ছাড়া পশু-পাখিরা ও এ’কুলের উপর আসক্ত। বাগান রক্ষা করার জন্য নেট ও ঘেরা-বেড়া দিয়েছেন এবং সার্বক্ষণিক দেখ-শুনা ও করে যাচ্ছেন। সময়ের প্রয়োজনে যথাযথ পরামর্শ গ্রহণ করেন স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে। গাছ থেকে ফলন সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পর পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় প্যাকেটজাত করে ক্রেতাদর কাছে সরবরাহ করা হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ’ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিউল ইসলাম জানান, কুলচাষীর সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে, পদুয়া,কলাউজান, পুটিবিলা ও চুনতি এলাকার কোন কোন চাষী কুলচাষে ঝুঁকে পড়েছেন। যাঁরা সহায়তা চান, তাঁদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শদানে সহায়তা করে যাচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
