১৭ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ সোমবার শরৎকাল

শিম চাষের ফলন দেখে আনন্দিত লোহাগাড়ার পদুয়ার ফরিয়াদিকূলের চাষী কামাল

লোহাগাড়া থেকে মোঃ ইউসুফ : পদুয়া ইউনিয়নের ফরিয়াদিকূল শীতকালীন শাক-সবজি উৎপাদনে উপজেলার অন্যতম চারণভূমি। পাশর্^বর্তী হাঙ্গর খালের পানির উর্বরা শক্তির কারণে এ’এলাকায় ফলন ভাল হয়। পানি সেচের সুবিধার জন্য উক্ত এলাকায় হাঙ্গর খালের উপর স্থাপন করা হয়েছে রাবার ড্রাম। বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হন চাষীরা। আবার লাভবান হন আমন ও শীতকালীন শাক-সবজি উৎপাদনে। ১৬ জানুয়ারী এলাকা পরিদর্শনকালে দৃষ্টিগোচর হয় শীতকালীন শাক-সবজির সবুজ ক্ষেত। পুরো এলাকা জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির শাক-সবজি ক্ষেত। চারিদিকে দেখা যায় সবুজের সমারোহ। প্রকৃতির আশীর্বাদপুষ্ট রতœভান্ডার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে এলাকার খালের চরে ও বিলে। ওই সময় সাক্ষাৎ হয় কর্মব্যস্ত এলাকার শিম চাষী জনৈক কামাল উদ্দীনের সাথে। আলাপচারিতায় তিনি বলেন, পেশায় তিনি একজন কৃষক। বর্ষা মৌসুমে খর¯্রােতা হাঙ্গর খালের বানের পানিতে তাঁদের ধান চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সে’ই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাঁরা আমন ও শীতকালীন শাক-সবজির চাষ করেন। এ’বছর তিনি প্রায় ৮০ শতক জায়গায় সবজি চাষ করেছেন। তন্মধ্যে ৮ শতক জায়গায় শিমের চাষ করেন। ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি তাতে। এতে তাঁর ব্যয় হয় আনুমাণিক ৩০ হাজার টাকা। মাটির উর্বরতা শক্তি পানি ও সেচের সুবিধে থাকায় এবার তিনি পূর্বের চাইতে ভালো ফলনের আশা করেছেন। দেশী ও বিদেশী শিমের ক্ষেত রয়েছে তাঁর। দেশীয় শিমের স্বাদ বেশী হওয়ায় এর চাহিদা ও রয়েছে প্রচুর। ইতোমধ্যে ফলন পেতে শুরু করেছেন। এ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শিম ক্ষেতের অবস্থা ভালো রয়েছে। তবে, সার-কীটনাশক ও দিন মুজুরের পারিশ্রমিক ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বের তূলনায় লভ্যাংশ কম হবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, শিম তোলা শুরু হয়েছে। ফুলে-ফলে ক্ষেত ভরে গেছে। মৌসুমের শুরুতে ভালো দাম পাওয়া গেলে ও ভরা মৌসুমে দাম কিছুটা কমে যায়। যেহেতু তাঁরা পাইকারি বিক্রি করেন,সেহেতু তাঁরা খুচরা বিক্রেতাদের চেয়ে কম লাভবান হন। বর্তমানে স্থানীয় খুচরা বাজারে কেজি ৭০/৮০ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু তাঁরা পাইকারি মূল্য পান ৫০/৬০ টাকা কেজি প্রতি। স্থানীয় সবজি চাষীরা জানান, শীতকালীন শাক-সবজি উৎপাদনে তাঁরা যদি সরকারের কাছ থেকে সহজ শর্তে ঋণ পেতেন এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকত তাহলে এলাকার চাষীরা আরো বেশী উপকৃত হতে পারতেন। অপর একটি সমস্যার কথা তাঁরা উল্লেখ করে বলেন, শাক-সবজি সংরক্ষণে যদি এলাকায় হিমাগার থাকত তাহলে চাষী ও ক্রেতারা উভয়ই উপকৃত হতেন। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিউল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষীরা শিম চাষে নন বরং সব প্রকার শাক-সবজি উৎপাদনে সফল হয়েছেন। তাঁর অফিসের ব্লক সুপারভাইজারেরা সার্বক্ষণিক এ’ব্যাপারে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন এবং কৃষকদেরকে ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।