ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও অক্সফাম ইন বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরাম (বিবিএফ) বাস্তবায়িত “এম্পাওয়ারম্যান্ট অব্ ফিশারউইমেন ইন কোস্টাল চট্টগ্রাম এন্ড কক্সবাজার (ইএফসিসিসি) প্রকল্প”র আওতায় গত ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ বুধবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ৩৪ নং পাথরঘাটা ওয়ার্ড কার্যালয়ে মৎস্যজীবী ও মৎস্যখাতে কর্মরত নারীদের অধিকার বিষয়ক এক এডভোকেসি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর। সংলাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা লিগ্যাল এইড (ডিল্যাক) কার্যালয়ের প্যানেল আইনজীবী ও চট্টগ্রাম বারের সিনিয়র সদস্য এডভোকেট এ. এফ. এম. সালাহ্ উদ্দিন ও সভাপতিত্ব করেন ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরাম এর ম্যানেজার (সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম) সোহাইল উদ দোজা। সংলাপে আরো বক্তব্য রাখেন জেলে পরিবার ও স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির প্রতিনিধি তরনী সেন দাশ, ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী রতন দাশ, ওয়ার্ড সচিব সাজু মহাজন, ইউএনডিপি (এলআইইউপিসি-চসিক) প্রতিনিধি জিন্নাত সুলতানা, মৎস্যজীবী নারী রুমা বেগম, চম্পা দাশ ও শেফু দাশ, সমলোক সিবিও সেক্রেটারী ফজলুল আমীন এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিবিএফ’র মাহবুবা আকতার।
অধিকার ভিত্তিক এডভোকেসি সংলাপে মৎস্যজীবী ও মৎস্যখাতে কর্মরত নারীদের কর্মক্ষেত্র, পরিবার ও কমিনিটিতে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা ও বৈষম্য হ্রাস, পেশাগত স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো, নারীদের অধিকার সুরক্ষা, আইনি অভিগম্যতা, সরকারি-বেসরকারি সেবার প্রাতিষ্ঠানিক সেটআপ শক্তিশালীকরণ এবং কমিউনিটি পর্যায়ে আইনী ও অন্যান্য সেবা পয়েন্ট স্থাপন ইত্যাদি বিষয়ের উপর প্রকল্পের কার্যক্রমগুলোর অগ্রগতি ধারনা প্রদান করা হয়। প্রকল্পের আওতায় সম্পাদিত বেইজলাইন সার্ভে ও মৎস্যখাতে কর্মরত নারীদের পেশাগত স্বাস্থ্যঝুঁকির উপর পরিচালিত গবেষণাপত্রের ভিত্তিতে বক্তারা আলোচনায় অংশ নেন। বক্তারা বলেন, ওয়ার্ডে ৩৫০ জনের জেলে কার্ড আছে এবং আরো ৫১৩ জনের আবেদন তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। তবে মৎস্যখাতে নিযুক্ত প্রকৃত জেলেদের ২২ দিন ও ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকার সময় সরকারি সেবা আরো উন্মুক্ত হওয়া দরকার। মৎস্যখাতে চাকুরীরত নারীরা ৩০০-৪৫০ টাকা মজুরী পায়, পক্ষান্তরে পুরুষদের প্রায় ৭০০ টাকা, এ’ বৈষম্য হ্রাস করা উচিত। মৎস্যখাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগনও অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখনি হয়, যা’ জরীপ ও গবেষণায় উঠে আসা তথ্যগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যদি সুপারিশগুলো আমলে নেয়া হয় তবে এ’ খাতের ব্যাপকতা বাড়বে। মৎস্যখাতে কর্মস্থলগুলো আরো স্বাস্থ্যসম্মত করা এবং নারীদের জন্য আলাদা স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা, মাতৃদুগ্ধ পান করানোর কক্ষ, সন্তানদের রাখার পরিবেশ ও সুবিধাদি বাড়ানো হলে উৎপাদনেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এইখাতের নারীরা অনেক ধরনের জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়। ওয়ার্ডে বিবিএফ’র কমিউনিটি লিগ্যাল সাপোর্ট ইউনিট(সিএলএসইউ) গঠন অথবা জেলা লিগ্যাল এইড এর সার্ভিস পয়েন্ট স্থাপিত হলে প্রান্তিক নারীদের জন্য সেবা উন্মুক্ত হবে। প্রধান অতিথি ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাঁর কার্যালয়ে সিএলএসইউ স্থাপনে একটি কর্ণার বরাদ্দ দিতে এবং যে কোন প্রশিক্ষণে কক্ষ ব্যবহারে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। বিশেষ অতিথি প্রান্তিক নারীদের সহায়তা প্রদানে সার্বিক সহযোগিতার আশ^াস প্রদান করেন।