২৩শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ রবিবার শরৎকাল

দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সবার মাঝে জাগিয়ে তুলতে হবে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, আপনারই হচ্ছেন আগামীতে দেশের কান্ডারী। আপনাদের শপথ গ্রহণকালে আজকে জাতির পিতার ভাষণ চালানো হয়েছে। ভাষণের একটি অংশে তিনি বলেছেন ট্রেনিং শেষ করে নতুন ট্রেনিংয়ে যাওয়ার জন্য। এটার মাধ্যমে তিনি যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন সেটা হল যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, লাল সবুজের পতাকা থাকবে ততদিন দেশের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে। যে মানুষের দেশপ্রেম নেই সে মানুষরূপী হলেও তার সুকুমারবৃত্তি এবং মনুষ্যত্ব ধ্বংস হয়ে যায়। তাই সবার মাঝে দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে।
মেরিন ফিশারিজ একাডেমি, চট্টগ্রাম এর ৪২তম ব্যাচের ক্যাডেটদের পাসিং আউট প্যারেডে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে মেরিন ফিশারিজ একডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ হাসান, (জি), বিসিজিএমএস, পিএসপি, বিএন সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট, সরকারি শিপিং অফিসসহ অন্যান্য মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সেখানে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাচে নটিক্যাল বিভাগে ৬০জন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৫৯জন (০৪ জন মহিলা) এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগে ১৯ জন (০১ জন মহিলা) ক্যাডেটসহ সর্বমোট ১৩৮জন (০৫ জন মহিলা) ক্যাডেট পাসড আউট হয়। সাফল্যেও স্বীকৃতি পুরস্কার হিসেবে মন্ত্রী ক্যাডেটদের মধ্যে পদক বিতরণ করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, জীবনের গতিকে রাখতে হবে অপ্রতিরোধ্য। আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে অন্ধকার ভেদ করে এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে দেশপ্রেম, দৃঢ় আত্মবিশ^াস, অধ্যবসায়, সুচিন্তিত, বলিষ্ঠ লক্ষ্য এবং পরিশ্রম কখনোই বিফল হয় না। একদিন আপনারা অনেক বড় হবেন। দেশে ও দেশের বাইরে আপনারাই হবেন দেশের এ্যাম্বাসেডর। বিদেশের জাহাজে আমাদের যে ক্যাডেট যাবেন তিনিই কিন্তু বাংলাদেশের এ্যাম্বাসেডর। তার আচরণ, কর্মদক্ষতাই প্রমাণ করবে ক্যাডেটদের যোগ্যতা।
তিনি বলেন, যারা আগে এখান থেকে পাস করে বেরিয়েছে তারাই আজকে আমাদের দেশকে বিশে^র কাছে তুলে ধরেছে। তারা সততা, কর্তব্যনিষ্টা ও দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়ে এ সম্মান অর্জন করেছে। আজকে বিশে^র বিভিন্ন দেশ আমাদের নৌবাহিনীর প্রশংসা করে। এ প্রশংসা তিরিশ লক্ষ শহিদের, সম্ভ্রম হারানো দ’ুলক্ষ মা-বোনের এবং জাতির পিতার চৌদ্দ বছরের কারাবরণের।
মন্ত্রী বলেন, এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে আপনারা যে শিক্ষা পেয়েছেন তা যেন স্তিমিত হয়ে না যায়। আপনাদের মেধা, নৈপুন্যতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। এখান থেকে যা শিখে যাচ্ছেন সেটা যেন নৈতিকতা, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম এবং কর্তব্যনিষ্টার মধ্য থেকে সম্প্রসারিত হয়। কখনোই যেন সেটা সংকুচিত হয়ে না যায়।
তিনি আরো বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে গেলে নারী ও পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। নারীরা আজ ঘরের মধ্যে আবদ্ধ নন। নারী আজকে দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, ডাক্তার। সবকিছুতেই তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে নারী ক্যাডেটদের স্বপ্ন নিতে হবে নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে। আপনাদের বুঁিনয়াদী প্রশিক্ষণ এখানে দেয়া হয়েছে। এরপরে বেড়ে ওঠার দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা যে জ্ঞান এখান থেকে অর্জন করেছেন সেটা দেশের উপকারে না লাগলে দেশ কখনোই উন্নতি করতে পারবে না। সুতরাং দেশের স্বার্থে নিজেকে বিলিয়ে দেবার মানসিকতা তৈরি করুন।