১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার বসন্তকাল

সকল দুর্যোগের সময় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির অবদান অনন্য : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ একটি ঝড়, বন্যা জলোচ্ছাসর দেশ। এদশে বন্যা একটি নিয়মিত বিষয়, প্রতি বছর বন্যা ২০ শাতাংশ ভূমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। ১০ বছর অন্তর অন্তর ষাট থেকে সত্তর শতাংশ ভূমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। এ বন্যার সময় মানুষের যে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ হয়, ঘূর্ণিঝড়ের সময় মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া থেকে শুরু করে সকল দুর্ভোগের সময় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি অনন্য অবদান রাখে।
আজ ১৮ আগস্ট তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামের বিআরটিসি মোড়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-রেড ক্রিসেন্ট ফিজিও অর্থোপেডিক পুণর্বাসন সেবা কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বক্তব্য শেষে চসিক মেয়র প্রধান অতিথিকে সাথে নিয়ে ফিতা কেটে সিটি কর্পোরেশন-রেড ক্রিসেন্ট ফিজিও অর্থোপেডিক পুণর্বাসন সেবা কেন্দ্রে শুভ উদ্বোধন করে। উপস্থিত সকলে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেয়। পরে প্রধান অতিথি ভবনের ফলক উন্মোচন করে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ দেশের বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি একটি মানবিক জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। মানবিক রাষ্ট্রে অসহায়, বাস্তুচ্যুত, প্রান্তিক জনগোষ্ঠির দায়িত্ব নেয় রাষ্ট্র । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশকে সামাজিক ও মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করার লক্ষেই বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা চালু করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে দেশের গ্রামীণ অসহায় মানুষকে ২২ প্রকার ভাতা দেওয়া হয়। প্রতি ইউনিয়নে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ বিভিন্ন প্রকার ভাতা পায়। যে মানুষটি একসময় দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করতো, রোদে পুরতো, মুষলধারে বৃষ্টির সময় কারো ছাদের নিচে আশ্রয় নিতো। অনেক সময় সেই বাড়ির মানুষ তাদেরকে তাড়িয়ে দিতো। সেই মানুষটি স্বপ্ন দেখতে ‘আমার যদি একটি দোচালা ঘর হতো’ । তাদের স্বপ্নকেও হার মানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমির মালিকানাসহ পাকা টিনসেট ঘর করে দিয়েছে। একজন কুষ্ঠ রোগী, যার কাছে কেউ যায় না, বেদে সম্প্রদায় যারা ঘর বাঁধে না, নৌকায় বসবাস করে তাদেরকেও ঘর করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকারের ঔষধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকে যে মানবিক কাজগুলো করছে দেশ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি অনন্য অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় দেশের ১ কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। আরো ১ কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। লাখ লাখ মানুষ যুদ্ধের সময় পঙ্গু হয়েছিল। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সেই সময় মানুষের পুনর্বাসন থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখেছে।
এসময় মন্ত্রী বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সোসাইটির ট্রেজারার এম. এ. ছালামকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এম. এ. ছালাম তিনি তার মায়ের মেজবান না করে সেই অর্থ দিয়ে ফিজিও অর্থোপেডিক পুণর্বাসন সেবা কেন্দ্র তৈরীর জন্য দান করেছেন। এটি একটি দৃষ্টান্ত, এটি সকলে অনুসরন করতে পারে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এ. টি. এম. আবদুল ওয়াহ্হাব এর সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়ের মো: রেজাউল করিম উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এসময় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ট্রেজারার এম. এ. ছালাম, চট্টগ্রাম সিটি রেড ক্রিসেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর পারভেজ বক্তৃতা করেন। এছাড়াও এনায়েত বাজার ওয়ার্ডেও কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ বাচ্চু, ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য ও জেলা রেড ক্রিসেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ শেখ শফিউল আজম,জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারী মোঃ আসলাম খান, সিটি রেড ক্রিসেন্টের কার্যকরী পর্ষদ সদস্য মনজুর মোর্শেদ, এইচ এম সালাউদ্দিন, মহসিন উদ্দিন চৌধুরী ফয়সাল ।