২৫শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার শরৎকাল

চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ইনোভেশন শোকেসিং

সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি-৪) দিলীপ কুমার বণিক বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। যুগোপযোগী নতুন নতুন উদ্ভাবনের ফলে মানসম্মত প্রাথমিক বাস্তবায়ন হতে চলেছে। শুধু চট্টগ্রাম নয়, সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে আধুনিকায়ন করতে বর্তমান সরকার ইনোভেটিভ আইডিয়ার মাধ্যমে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। শুধু নতুন নতুন উদ্ভাবন করলে হবে না, মানুষকে সেবা দিতে হবে। আগামী ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারী সেবা সহজ থেকে সহজীকরণসহ কোয়ালিটি সার্ভিসের বিকল্প নেই। আজ ১০ জুন ২০২৩ ইংরেজি শনিবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম নগরীর আইস ফ্যাক্টরী রোডস্থ পিটিআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ইনোভেশন শোকেসিং-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস দিনব্যাপী ইনোভেশন শোকেসিংয়ের আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানে ৭টি স্টলে ১০জন ইনোভেটরের সমন্বয়ে ১০টি উদ্ভাবনী প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দরা
উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলোর স্টল পরিদর্শন করেন। প্রকল্পগুলো হচ্ছে-অনলাইন পাঠশালা (উদ্ভাবক-সুমন নন্দী, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর), চলো আমরা ক্লাস সাজাই, মনের আনন্দে স্কুলে যাই (উদ্ভাবক-শমসের নেওয়াজ মুক্তা, সহকারী শিক্ষক), বন্ধুর প্রশংসায় ঘটে আচরণের পরিবর্তন (উদ্ভাবক-হাবিবা ফেরদৌস আরা খানম, সহকারী শিক্ষক), বিদ্যালয়ে আর্থিক ব্যবস্থাপনা (উদ্ভাবক-সোহেল রায়হান রাশেদ, সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার), কিডস্ ক্রিয়েটিভ ক্লাস (উদ্ভাবক-মুনিরা ইয়াছমিন মনি, সহকারী শিক্ষক), অ্যাকশন রিসার্চ (উদ্ভাবক হোসাইন মোহাম্মদ এমরান, ইন্সট্রাক্টর), হেসে খেলে ছন্দে-শিখি আনন্দে (উদ্ভাবক-ইসমত ফারজানা, প্রধান শিক্ষক), বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা ডাটাবেজ সফট্ওয়্যার (উদ্ভাবক মোঃ সাইফুল্লাহ সরোয়ার, সহকারী শিক্ষক), অজানা কে জানা (উদ্ভাবক-মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক) ও লাল সবুজ পতাকা ধরি, ছুটির আনন্দে যাবো বাড়ি (উদ্ভাবক-মোহাম্মদ আজাদ ইকবাল পারভেজ)।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি দিলীপ কুমার বণিক বলেন, একসময় সরকারী অফিসে গেলে এদিক-সেদিক ঘুরতে হতো। পেনশন পেতে অনেক ধরণের কাগজপত্র দিতো হতো, পেনশনের আশায় অনেকেকে জীবন সায়াহ্নে চলে যেতে হতো। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের পর নতুন নতুন উদ্ভাবনের কারণে পেনশন নীতিমালা এখন সহজতর হয়েছে। ভূমি ব্যবস্থাপনা ও সরকারী অন্যান্য সেবায়ও আমুল পরিবর্তন এসেছে। প্রত্যেক অফিসে আগে সিটিজেন চার্টার ছিল, এখন ফ্রন্টডেক্স করা হয়েছে। সেবা প্রার্থীরা অফিসে প্রবেশ করলেই ফ্রন্টডেক্সে জানতে পারবে তার কাজ কোন কক্ষে বা কোন্ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে। অফিস ও কাস্টমার বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করাটাই এক ধরণের উদ্ভাবন। বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে যেভাবে ঢেলে সাজিয়েছেন তার প্রমাণ ইনোভেশন শোকেসিং।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও প্রধান শিক্ষক সৈয়দা রাকেমা হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) এস.এম আনছারুজ্জামান, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ ইমামুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক ড. মোঃ শফিকুল ইসলাম, পিটিআই সুপারিন্টেন্ডেন্ট জয়নাল আবেদীন ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা অফিসার রোকসানা হায়দার। চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ইনোভেশন শোকেসিংয়ে অংশ নেন।
আলোচনা সভায় অন্যান্য অতিথিবৃন্দরা বলেন, স্মার্ট বাাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষা ব্যবস্থা আরও কিভাবে সহজীকরণ করা যায় সে বিষয়ে নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে স্কুলগুলো সাজাতে হবে। বিভিন্ন ইনোভেটরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও নতুন নতুন ইনোভেটিভ আইডিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষায় চট্টগ্রাম তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এর ধারাবাহিতা রক্ষা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কোন ধরণের ভোগান্তি ছাড়াই সরকারী সেবা সহজীকরনের মাধ্যমে অতি কম খরচে ও কম সময়ে জনগণের দোরগোড়ায় কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায় সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে হবে।