ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা আজ বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অমীমাংসিত দ্বিপাক্ষিক ইস্যুগুলোতে বড় ধরনের কোন মতানৈক্য নেই, দেশ দুটি তাদের মধ্যকার সম্পর্কের ‘সোনালী অধ্যায়’ অতিবাহিত করছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সাথ এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু আমরা এতে বড় ধরনের কোন মতানৈক্য পাইনি। দু’দেশের মধ্যে শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্র রয়েছে। এখন আমরা (এই ইস্যুগুলো সমাধানে) কিভাবে কাজ করতে পারি- তার উপায় খুঁজছি।’ রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে ৫০ মিনিটব্যাপী দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর দুই পররাষ্ট্র সচিব একসাথে গণমাধ্যমের সামনে আসেন।
বাংলাদেশী পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন, ‘(বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে) বহুমুখী ইস্যু রয়েছে এবং আমরা সকল অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের মধ্যে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কিভাবে আমরা আমাদের সীমান্তে শান্তি বরাজ রাখতে পারি, সে ব্যাপারেও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।’ তাদের মধ্য যোগাযোগ, সবুজ শক্তি, সবুজ প্রযুক্তি, ই-কমার্স এবং কিভাবে দু’দেশে এগিয়ে যেতে পারে সে সম্পর্কেও আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারত নিরাপদ ও সুরক্ষিত না থাকলে, বাংলাদেশও নিরাপদ থাকতে পারে না। আবার বাংলাদেশ নিরাপদ ও সুরক্ষিত না থাকলে, ভারতও নিরাপদ থাকতে পারে না। তাই কোভিড সহযোগিতার ব্যাপারে উভয় পক্ষই পারস্পারিক সহায়তা অব্যহত রাখার কথা পুনরুল্লেখ করেছে। দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসন্ন রাষ্ট্রীয় সফরের প্রস্তুতিতে সহায়তা করতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আজ সকালে বাংলাদেশে পৌঁছেছেন।
শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের জনগণই তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের রক্ত দিয়েছেন। ‘এমন ঘটনা খুবই বিরল। আমরা আপনাদের বিজয়ে গর্বিত, আমরা আপনাদের উদযাপনে অংশ নিতে পেরে গর্বিত।’
তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি গত মার্চে এখানে সফর করেছেন এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি এ মাসেই এখানে সফরে আসার কথা রয়েছে এবং এটি একটি রেকর্ড তৈরি করবে যে একই বছরে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী একই দেশ সফর করেছেন। এছাড়াও শ্রিংলা বলেন, কোভিড অচলাবস্থার পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি উভয়েই তাদের প্রথম সফরের গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছেন যা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের সোনালী অধ্যায়ের চিত্র তুলে ধরে।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সম্পর্কে তিনি বলেন, সবুজ শক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং উভয় দেশের যুব প্রজন্মের কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য খাত সহ কিছু দূরদর্শী বিষয়েও তারা আলোচনা করেন। শ্রিংলা বলেন, দুই দেশের মধ্যে সংযোগ প্রকল্প খুব ভালো ভাবেই চলছে, ছয়টি রেল সংযোগের মধ্যে পাঁচটি ইতোমধ্যেই পুন:স্থাপিত হয়েছে এবং ষষ্ঠটি এ বছরের মধ্যেই শেষ হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে ভারত পরিবেশ-বান্ধব রেলপথ এবং জলপথ সংযোগ উন্নয়ন করতে চায়।
আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত অবশ্যই উচ্চ পর্যায়ের সম্পর্ক এবং ডিসেম্বরে একটি শীর্ষ বৈঠকের জন্য উন্মুখ।
